আমাদের যে কোন পণ্য অর্ডার করতে কল বা WhatsApp করুন: +8801744-144714
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

আমাদের যে কোন পণ্য অর্ডার করতে কল বা WhatsApp করুন: +8801744-144714

প্রতিদিন আদা খাওয়ার উপকারিতা

আদাকে আমরা মসলা হিসেবে চিনলেও আদা খাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রয়েছে এবং সেসকল ভিন্ন সেবনবিধির রয়েছে হরেক উপকারিতা। এসকল উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অজ্ঞাত বলেই শুধু জ্বর, সর্দি-কাশি উপশমে আমরা আদা ব্যবহার করে থাকি বা বড় জোড় চায়ে আদা মিশিয়ে খেয়ে থাকি। কিন্তু আদার উপকারিতা শুধু প্রাথমিক চিকিৎসায় সীমাবদ্ধ নয়। কথায় বলে, আদা রোগ নিরাময়ে দাদা। আদাতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা আমাদের শরীরকে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাই সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের জন্য আদার কোন বিকল্প নেই। আজকের ব্লগে আদার পুষ্টি গুণাগুণ ও সকল উপকারিতা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ ব্লগটি পড়ুন।

আদার পুষ্টি উপাদান

আদায় প্রায় ৪০০ এরও বেশি উপাদান রয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা এর মধ্যে বিদ্যমান ‘জিনজেরল কম্পাউন্ড’-এর পুষ্টিগত ভূমিকাকে মুখ্য হিসেবে ধরেছেন। এটি আদাতে স্বাদ ও গন্ধ আনে। এই জিনজেরলে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ক্ষমতা। এছাড়াও আদাতে রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। যার কারণে সব বয়সের মানুষের জন্যই আদা উপকারী। বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা সুস্থ দেহ ও মন সতেজ রাখতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আদার উপকারিতা

আদার উপকারিতা বলে বা লেখায় প্রকাশ করার মত নয়। এর উপকারিতা এতই বিস্তৃত যে অনেকে ধারণা করে থাকেন এর উপকারিতার সংখ্যা একশ এরও বেশি। তবে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে না বলে আমরা চেষ্টা করেছি সাতটি উপকারিতার মাঝে এর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা তুলে ধরতে। চলুন দেখে নেয়া যাক আদার সেই সাতকাহন।

১। পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে

আদার এরূপ কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে, যা পাকস্থলী ও খাদ্য পরিপাকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। গর্ভবতী নারীদের অনেক সময় গর্ভের শুরুর দিকে ‘মর্নিং সিকনেস’ হয়। সেটা থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে কাঁচা আদা মুখে রেখে অল্প অল্প করে চিবিয়ে খাওয়া। এতে বমি বমি ভাব দূর হয়। অন্য কারণেও বমি বমি ভাব হলে আদা খেলে দ্রুতই এই ভাব দূর হয়।

বদহজম দূর করতেও আদা অত্যন্ত কার্যকরী। গবেষণায় পাওয়া গেছে, খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক টুকরা আদা খেয়ে নিলে তা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের মত কাজ করে এবং বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

২। ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে

অস্থিসন্ধির সমস্যা, যে কোন জয়েন্ট ড্যামেজ, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি সমস্যার কারণে শরীরে যে চরম ব্যথা অনুভব হয় তা থেকে মুক্তি পেতে আদা ভাল উপকারে আসে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এসব ব্যথা থেকে উপশম পাওয়ার জন্য আদা ব্যবহার করা হয়। কারণ এতে রয়েছে প্রদাহরোধী গুণ। এছাড়া মাসিকের সময় মেয়েদের তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়। আদার প্রদাহরোধী গুণ এই ব্যথা দূর করতেও উপকারী।

৩। ডায়াবেটিস কমায়

খাবারের সাথে নিয়মিত আদা খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীকে যদি টানা ১২ সপ্তাহ ধরে ১৬০০ মিলিগ্রাম আদা খাওয়ানো হয়, তবে তার শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমে এবং সার্বিক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের অন্তত প্রতিদিন ২ গ্রাম করে আদা খাওয়া উচিত। এতে ফাস্টিংয়ে দ্রুত ব্লাড সুগার কমে যাবে।

৪। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নানা উদ্ভিদের মূল বা কাণ্ডকে ক্যানসার প্রতিরোধক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আদাও তন্মোধ্যে একটি উপকারী উদ্ভিদ। আদার মধ্যে থাকা জিনজেরল ক্যানসার সেলের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে। এই জিনজেরল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা বিশেষ ভাবে খাদ্যনালীর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। আদা পাকস্থলীতে সৃষ্টি হওয়া প্রাত্যহিক ক্ষতকে সারিয়ে ক্যানসার হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

৫। চুলের যত্নে কার্যকরী

অনেকে আদা বেটে হেয়ার প্যাক বানায়। যা ব্যবহারে চুল পড়া, খুশকি হওয়া, চুল ফাটা বা ভাঙ্গা, অকালপক্ক হওয়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে প্রাকৃতিক ভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। এমনকি চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতেও আদা অত্যন্ত উপকারী।

৬। সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগা উপশম করে

আদার একটি গুণ হচ্ছে এটি শরীর গরম করে। ফলে ঠান্ডা লাগলে বা জ্বর আসলে আদা শরীর গরম করে ঘামের সৃষ্টি করে এবং ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ দূর করে। কাশির ক্ষেত্রে সকালবেলা খালি পেটে এক টুকরা আদা মধু ও তুলসীপাতার সঙ্গে চিবিয়ে আস্তে আস্তে রসটা খেলে কিছুক্ষণ পর কফ উঠতে শুরু করে এবং আরাম বোধ হয়। নিয়মিত এভাবে কিছুদিন খেলে ঠান্ডাজনিত কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

আদাতে বিদ্যমান জিনজেরল দেহের যেকোনো ইনফেকশনকে প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, আদা রেসপিরেটরি সেংশাল ভাইরাস প্রতিহত করে ঠান্ডা লাগা থেকে সৃষ্ট শ্বাসনালির সংক্রমণ ও ঠান্ডাজনিত লক্ষণগুলোকে প্রতিরোধ করে। এছাড়াও আদা হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, খাদ্যনালী, লিভার ইত্যাদি অন্ত্রের নানা রোগ প্রতিরোধে সার্বিক সহায়তা করে।

পরিশেষে

আদার উপকারিতা অসীম। এটি ছোট-বড় সকল বয়সের মানুষজন কোন প্রকার ক্ষতি ছাড়াই খেতে পারে। নিয়মিত সেবনে আদা মানুষকে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে সহায়তা করে। এটি জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে পরিপাক তন্ত্র সুরক্ষিত রাখে, পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, শরীরের অভ্যন্তরীন অন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে ইত্যাদি নানা উপকারের পাশাপাশি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই নিয়মিত আদা সেবনের মাধ্যমে অসুস্থতা প্রতিরোধ করে সুস্থ থাকা সম্ভব। এক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন ন্যাচারালস আদা গুঁড়ায়। যা সরাসরি প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে কোন প্রকার ক্যামিকেল প্রিজারভেশন ছাড়াই স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। তাই আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্যে ন্যাচারালস আদা গুঁড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top